Which Department Will I Study? | কোন বিভাগে পড়বো?
যারা সদ্য জেএসসি/জেডিসি-২০১৮ পরীক্ষা দিয়েছো তাদের অনেকের
রেজাল্ট নিয়ে যত না
চিন্তা তার চেয়ে বেশী চিন্তা হচ্ছে নবম শ্রেণিতে কোন বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করবো ?এমন
চিন্তা যখন মাথায় আসে তখন তোমাদের জানতে হবে তোমার নিজের ইচ্ছা কি?তুমি নিজেকে ভবিষ্যতে কোন
অবস্থানে দেখতে চাও ? যখনই এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর তুমি পাবে,তখন তুমি নিজেকে যে
অবস্থানে দেখতে চাও সেই অবস্থানে যেতে হলে তোমার কি কি পড়তে হবে সেটাও জানতে
হবে,যখনি তুমি জানতে পারবে যে তোমাকে কি কি পড়তে হবে তখন তুমি বুঝতে পারবে যে এই
বিষয় গুলো কোন বিভাগের সাথে রিলেটেড,অতঃপর ঐ বিভাগ নিয়ে শুরু করবে নবম শ্রেণির
যাত্রা।
এখন আমরা কথা বলবো ৪ টি বিভাগ নিয়েঃ
- বিজ্ঞান
- মানবিক
- ব্যবসায় শিক্ষা
- কারিগরি
বিজ্ঞানঃ বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল
দেশে সর্বোচ্চ কদর পায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা,এবং তাদের সবাই মেধাবী
শিক্ষার্থী বলে গণ্য করে,যদিও এর যথেষ্ট পরিমাণে ব্যাখ্যা রয়েছে।বর্তমান এই
প্রযুক্তির যুগে প্রায় সকল উদ্ভাবনের পিছনে রয়েছে বিজ্ঞান এর ভূমিকা,অনেকে বর্তমান
এই প্রযুক্তির যুগকে বিজ্ঞান নির্ভর যুগ বলে থাকেন এই কথাটিরও যথেষ্ঠ পরিমাণে যুক্তি
রয়েছে,যদি সকল কিছুর পিছনে বিজ্ঞান থেকেই থাকে তাহলে কেনো এই যুগকে বিজ্ঞান নির্ভর
যুগ বলা হবে না?
এই প্রশ্নের উত্তর কারো কাছে নেই ।তোমাদের কাছে আছে ? থাকলে জানিয়ে দাও কমেন্ট
বক্সে ।
যারা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে তাদের বেশীর ভাগ শিক্ষার্থীর ইচ্ছা বা উদ্দেশ্য থাকে
ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা বিজ্ঞানী বা পাইলট হওয়ার।এই বিভাগ থেকেই রিসার্চ নিয়ে
বেশী কাজ করা হয়।তোমারা যদি এই বিভাগ নিয়ে পড়তে চাও তাহলে তোমাকে অবশ্যই গণিতে
ভালো হতে হবে কেননা বিজ্ঞান মানেই গণিত ,যারা গণিতে দূর্বল তাদেরকে আমি ব্যক্তিগত
ভাবে বিজ্ঞান বিভাগ নিতে নিষেধ করবো।ভাইয়া আমি গণিতে দূর্বল তাই বলে কি আমি ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবো না ? হ্যা
পাড়বে কিন্তু সে জন্য তোমাকে গণিত নিয়ে অনেক পরিশ্রম করতে হবে ।তুমি নবম-দশম
শ্রেণিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার পরে যদি তোমার এই বিভাগ ভালো না লাগে তাহলে তুমি অন্য
কোনো বিভাগে যেতে পারবে কিন্তু তুমি অন্য বিভাগ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে আসতে পারবে না
।এই বিভাগের উচ্চশিক্ষার সুযোগ অনেক বেশী,বিজ্ঞান বিভাগ এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল,খুবই
চাহিদা সম্পন্ন একটি বিভাগ এটি,জব মার্কেটে এর ডিমান্ড সবচেয়ে বেশী।আশা করি
বিজ্ঞান বিভাগ সম্পর্কে তোমরা একটি স্পষ্ট ধারনা পেয়েছ।আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্টে
জানিয়ে দাও।
মানবিকঃবাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল
দেশের আইন ও শাসন বিভাগ,মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের দখলে।এছাড়াও দখল করে আছে
প্রতিটি দেশের অর্থনীতিকে।তুমি যদি একজন আইনজীবী হতে চাও বা একজন অর্থনীতিবিদ হতে
চাও ? তাহলে তোমার জন্যই মানবিক বিভাগ,বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মানবিক বিভাগের
শিক্ষার্থীদের তুলনামূলক ভাবে দূর্বল শিক্ষার্থী বলা হয়,এই বিভাগে্র শিক্ষার্থীদের
গণিতে দূর্বল বলে বিবেচিত করা হয়, কিন্তু
এটি সম্পূর্ণ একটি ভূল চিন্তা অনেক টপার রা এই বিভাগের শিক্ষার্থী,অনেক বিখ্যাত
মানুষ এই বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন,যারা না বুঝে শিশুদের মতো কথা বলে তাদের অন্তত
বোঝা উচিত যে কোনো বাজে শিক্ষার্থী একটি দেশের শাসন ব্যাবস্থাকে চালাতে পারে
না,শুধু গণিতে ভালো হলেই সে ভালো শিক্ষার্থী হয়ে যায় না ।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে
মানবিকের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষকতাকে তাদের পেশা হিসেবে
বেছে নেয়।এবং বাংলাদেশের ৭০ ভাগ ইংরেজী শিক্ষক মানবিক বিভাগের। ।বাংলাদেশের
প্রেক্ষাপটে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশী আসন বরাদ্দ
থাকে এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ বেশী।তোমরা নিশ্চই মানবিক বিভাগ সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছ,যদি আরো
কিছু জানার থাকে মানবিক বিভাগ সম্পর্কে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দাও।
ব্যবসায় শিক্ষাঃবাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে
বর্তমানে বিজ্ঞান বিভাগের চেয়েও শিক্ষার্থী বেশী এই বিভাগে,একটি সময়ে বাংলাদেশে
উক্ত বিভাগের জনপ্রিয়তা ছিল না বললেই চলে,কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া পরিবর্তিত হয়ে এই
বিভাগের শিক্ষার্থী সংখ্যা উচ্চ হারে বেড়ে যাচ্ছে ,এই বিভাগের চাকুরীর মাধ্যম অনেক
বেশী ।তুমি যদি একজন ভালো ব্যবসায়ী হতে
চাও,একজন ব্যাংকার হতে চাও তাহলে তোমাকে অবশ্যই উক্ত বিভাগে পড়াশোনা করতে হবে।এই
বিভাগের শিক্ষার্থীদের কে একটি মহল মধ্যম লেভেলের শিক্ষার্থী বলে বিবেচনা করে যদিও এটি একটি অগ্রহণ যোগ্য
মতামত।এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা খুবই মেধাবী হয়ে থাকে,উক্ত বিভাগের বেশীর ভাগ
শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা বা উদ্দেশ্য থাকে ব্যাংকার হওয়ার।এরা বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল
কোম্পানীতেও উচ্চপদে কাজ করে থাকেন।এই বিভাগের একটি বড় অংশ নিজ উদ্যোগে ব্যাবসা
করে থাকে যেখানে এই বিভগের আরো কিছু শিক্ষার্থীর কর্ম-সংস্থানের সৃষ্টি হয়।উক্ত
বিভাগ থেকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অনেক বেশী। নিশ্চই তোমরা উক্ত বিভাগ সম্পর্কে একটি
স্পষ্ট ধারণা পেয়েছো,যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দাও।
কারিগরিঃ
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বারবার আলোচিত-সমালোচিত শিক্ষা ব্যাবস্থার নাম কারিগরি
শিক্ষা।আমরা সবাই জানি একটি দেশের উন্নতির জন্য সর্বপ্রথম দরকার দক্ষ
জন-বল।পৃথিবীর সকল উন্নত দেশে কারিগরি শিক্ষার হার অনেক বেশী হলেও বাংলাদেশে এর
হার অনেক কম।একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় জার্মানীতে ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী কারিগরি
শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে ,কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ১২ ভাগ ।যা মোট শিক্ষার্থীর হিসেবে
খুবই কম।কারিগরি শিক্ষার মূল লক্ষ হচ্ছে দক্ষ জনবল তৈরি করা ।যারা কারিগরি শিক্ষায়
শিক্ষিত হয় তাদের সবার স্বপ্ন থাকে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার,বাংলাদেশের অনেকেই কারিগরি
শিক্ষাকে অবহেলা করে থাকে তারা অবুঝ শিশুর মস্তিষ্ক নিয়ে এমন চিন্তা ভাবনা করে
থাকেন,কিন্তু একটি উন্নত এবং বেকারমুক্ত দেশ গড়তে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প
নেই,চাকরির বাজারে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার সবার চেয়ে বেশী কেননা কারিগরি
শিক্ষায় হাতে-কলমে পাঠদান হয় এবং শিক্ষার্থীরা একসাথে কাজ ও একাডেমিক বিষয়ে দক্ষ
হয়ে ওঠেন।যারা কারিগরি শিক্ষায় ৯-১০ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করবে তাদের সবারই বিজ্ঞান
বিভাগের বই এবং কিছু প্রাকটিক্যাল বই পড়তে হবে কেননা কারগরি মানেই ইঞ্জিনিয়ারিং আর
ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে অবশ্যই তোমাকে বিজ্ঞান বিভাগের বই পড়তে হবে ।অনেকেই মনে করেন
কারিগরি শিক্ষায় গণিত নেই কিন্তু এটা ভুল ধারণা ,কারিগরি শিক্ষায় গণিতের ব্যাবহার
অনেক বেশী তাই গণিত অপরিহার্য।তোমরা যখন ৯-১০ম শ্রেণি পাশ করবে তখন তোমরা ডিপ্লোমা
ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হবে,বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৯টি সরকারী এবং ৪৫০+টি
বেসরকারী পলিটেকনিক আছে যেখানে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স টি চালু রয়েছে ।
বাংলাদেশে কারগরি শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ খুবই কম,৩/৪টি বেসরকারী এবং একটি
সরকারী(ডুয়েট,আসন-৬৫০) বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোথাও ডিপ্লোমা ডিগ্রী ধারীরা
বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারেন না ।তবে সরকার এ নিয়ে কাজ করছেন আশা করা যায় যে
দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় এ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা উচ্চশিক্ষা নিতে পারবেন।
আশা করছি তোমরা কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছো ।যদি আরো কিছু
জানতে চাও উক্ত বিভাগ সম্পর্কে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দাও ।
আমার এই ব্লগ টি কেমন
লাগলো সেটা জানাতে নিচের কমেন্ট বক্সে তোমাদের মতামত জানিয়ে দিতে পারো ,আমাদের সকল আপডেট সবার
আগে পেতে আমাদের ওয়েবপেজের ডান পাশে ফলো বাই ইমেইল বক্সে ইমেইল সাবমিট করতে পারো ।
লেখকঃ
নিজস্ব প্রতিবেদক,
মোঃসোয়াইব মৃধা(রিহান)
No comments